স্বপ্নের মোহ

স্বপ্নের মোহ 

 

তুমি কী জানো? হাওর পার হলেই কাজলের গ্রাম

পল্লীগ্রাম মানে ঘরের পাশে ঘর, নাহি কেহ পর।

দুঃখ দরিদ্রতা  বিন্নাপাতার ছায়ায় মুখের অস্পুট হাসি

কাজল গায়ে কাজল বরণ, চোখাচোখিতে মৃদু হাসি।

গ্রামে ছিল সূর্যদীঘল বাড়ি, সেখানে সারি সারি হাড়ি

অপয়া মালিহার বসত  ছিল সূর্যদীঘল বাড়ি।

গাঁয়ের মাঝখানে আলোর মিছিলের পাঠ

বিদ্যালয়ের সাথে গাঁয়ের ছিল না যোগসূত্রের ঘাট।

বছরের দুইভাগ হেমন্ত বরষা

বরষায় নাও হেমন্তে চলতো পাও।

কাঁদা আর পানিতে  যোগাযোগবিহীন গরীবের জীবন 

মেম্বার চেয়ারম্যান বুঝতো না অনাহারীর মন।   

 

হেমন্তে কাঁদা পেরিয়ে অপয়ারা আলোর পাঠে যায়

বরষায় নাও নেই, দুঃখে পরান যায়। 

মাতব্বরের ছেলে প্রহরীদের নিয়ে চলে

দূষ করিলেও  শিক্ষক বলে, বেশ করেছো ছেলে। 

 

কলঙ্কের তিলক অপয়ার ছিলনা পালক

মিথ্যে অভিযোগে পাচের বাদে কানে পড়ল নোলক। 

স্বপ্নের মোহে চলে গেল শহরে, আশ্রয় নিল ভাগারের পাশে

চাকুরী হলো সাভারের গার্মেন্টসে।

বিশকোটির  গার্মেন্টস মালিক, ঋণ করল হাজার কোটি

টাকা পাঠালো বেগম পাড়া

ব্যাংক হলো  দিশেহারা। 

অপয়াদের মাইনের জন্য মিছিল দিল আরমান 

শকুনিরা গুলি করে হয়ে গেল হয়রান। 

বসন্তের কোকিল চলে গেল সিকিম 

কাক পেঁচা চামচিকা ছল করে একা একা

পেটুয়ারা হাই তুলেদেশ গেল রসাতলে

চোখ, মাথা বুক দিল যারাতারাই হলো সর্বহারা।

 

শেখ মো. নজরুল ইসলাম 

সহযোগী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ

মুরারিচাঁদ কলেজ, সিলেট। 

  

 

 


Theme images by Storman. Powered by Blogger.